আরপিও ও আচরণবিধিতে আরেক দফা সংশোধন আসছে

আরপিও ও আচরণবিধিতে আরেক দফা সংশোধন আসছে

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তপশিল ঘোষণার আগে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এবং রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিতে আরেক দফা সংশোধনী আনতে হচ্ছে। মূলত পোস্টাল ভোটিং যুক্ত হওয়ার পর গণভোট অধ্যাদেশের সঙ্গে আরপিওতে সমন্বয় সাধনের জন্যই এই পরিবর্তন আনা হবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সমকালকে বলেন, গণভোটের কারণে আরপিওতে আবার সংশোধনী আনতে হচ্ছে। 
আচরণবিধিতেও ভাষাগত সংশোধন আসছে। যা বৃহস্পতিবার (আজ) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উঠবে। 

ইসির আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ উপদেষ্টা পরিষদে নীতিগত অনুমোদনের পর তা গেজেট আকারে জারি হয় গত ৩ নভেম্বর। এরপর ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫’ জারি হয় ১০ নভেম্বর। সবশেষ গত ২৫ নভেম্বর গণভোটের অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এই পরিবর্তনের মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর সুপারিশ, বিশেষ করে পোস্টার নিষিদ্ধ হওয়ার পর বিলবোর্ড ব্যবহার সীমিত করা নিয়ে সমালোচনা এবং আচরণবিধিতে করণিক ত্রুটি থাকার কারণে ইসি আবারও আরপিও সংশোধন করতে যাচ্ছে।

ইসি সূত্র বলছে, আরপিও সংশোধন ও আচরণবিধির অস্পষ্টতা দূর করতে সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবনা আইন মন্ত্রণালয়ে গত সপ্তাহে পাঠানো হয়। সরকারের সায় পেতে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন লাগবে অধ্যাদেশ সংশোধনে। তবে আইন মন্ত্রণালয়ের ভোটিংয়ের পর আচরণবিধির সংশোধন ইসি করতে পারবে।

যেসব বিষয়ে সংশোধন আনা হচ্ছে: গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এর অনুচ্ছেদ ২৭-এ প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো হলো- পোস্টাল ব্যালটে প্রতীকের বিপরীতে ক্রস বা টিক চিহ্ন না দিলে তা গণনা করা হবে না। আদালতের রায়ে প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন এলে ওই আসনের জমা হওয়া পোস্টাল ব্যালটও গণনা করা হবে না। ঘোষণাপত্রে ভোটারের স্বাক্ষর না থাকলে পোস্টাল ব্যালট গণনায় নেবে না।
 
তবে জোট করলেও স্ব স্ব দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষ থাকলেও তাতে কোনো সংশোধন আনছে না নির্বাচন কমিশন।
 
আচরণ বিধিমালায় সংশোধন: আচরণ বিধিমালার করণিক ভুল সংশোধনে আচরণ বিধিমালায় নতুন যেসব প্রস্তাবনা করা হয়েছে-দফা ৪-এর উপ-বিধি (৩), বিধি ৬ এর উপ-বিধি (ক), (খ), (গ), (ঘ), বিধি ৯-এর উপ-বিধি (গ) এবং বিধি ২৬-এর উপ-বিধি (৩) এর মতো বিভিন্ন স্থানে ভাষাগত ও করণিক ভুল (যেমন: ‘করিবে’ শব্দের স্থলে ‘করিতে পারে’) সংশোধন করা হচ্ছে।

এ বিধিমালার ১৪(খ) তে যে সংশোধনী প্রস্তাব রাখা হয়েছে- সংসদীয় আসনের প্রতি ইউনিয়ন বা পৌরসভা বা মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রতি একটি অথবা নির্বাচনি এলাকায় ২০টি (যা বেশি হয়)-এর অধিক বিলবোর্ড ব্যবহার করা যাবে না। এর ফলে প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে বিলবোর্ডে প্রচারের সুযোগ তৈরি হবে।

বিধি ১৭-এর উপবিধি (১) সংশোধন এনে নির্বাচনি প্রচারে মাইক ব্যবহারের সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হচ্ছে। 

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) শেষ ধাপের প্রস্তুতিতে রয়েছে। দুই ভোটের তপশিল ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘোষণা করা হবে বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। আগামী ৭ ডিসেম্বর কমিশন বৈঠকে তপশিল ঘোষণার তারিখ চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার এরই মধ্যে সমকালকে জানিয়েছেন, আগামী ৮ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে তপশিল এবং ৮ থেকে ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply