ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভাইস প্রেসিডেন্ট সাদিক কায়েম স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছেন যে লন্ডনে, দিল্লিতে বা পিন্ডিতে বসে আর কোনো রাজনীতি চলবে না। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে তারুণ্যকে ধারণ করে, ইনসাফকে ধারণ করে এবং এদেশের মাটি ও ভাষাকে ধারণ করে রাজনীতি করতে হবে। এদেশে এসেই রাজনীতি করতে হবে, বিদেশে বসে নয়।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পাবলিক ক্লাব মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত তারুণ্য উৎসব ও নির্বাচনী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাদিক কায়েম এসব কথা বলেন। তিনি উল্লেখ করেন, গত ১৬ বছরে তরুণরা ভোট দিতে পারেনি, এবং আজ তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি জুলাই আন্দোলনের উদাহরণ টেনে বলেন, ভোটকেন্দ্রগুলো নিরাপদ রাখার জন্য তরুণদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।
ডাকসুর ভাইস প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, গত ১৬ বছর ধরে একটি ফ্যাসিবাদী কাঠামো বাংলাদেশের সব ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে। শিক্ষা, অর্থ ও সাংস্কৃতিক ব্যবস্থা এই ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে। তাই বাংলাদেশকে নতুন করে বিনির্মাণের জন্য ইনসাফের প্রতিনিধিদের বাছাই করতে হবে। তিনি দাবি করেন, ইতোমধ্যে ইনসাফের প্রতিনিধিরা তাদের কাজের প্রমাণ দিয়েছে এবং বিপ্লবের আগে ও পরে তাদের মাঝে কোনো পরিবর্তন হয়নি।
তিনি বিশেষভাবে এ অঞ্চলে গত ৫৪ বছরে ভারতের নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে বলেন, ইনসাফের প্রতিনিধিরা এই নির্যাতনের প্রতিবাদ করেছে। সেজন্য তাদেরকে ব্যাপকভাবে বিজয়ী করে আনতে হবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, তরুণরা যে দিকে যাবে, বাংলাদেশও সেদিকে যাবে।
ঠাকুরগাঁয়ের উন্নয়ন প্রসঙ্গে সাদিক কায়েম বলেন, ঠাকুরগাঁয়ে একটি এয়ারপোর্ট ছিল, যা একটি দেশের প্রেসক্রিপশনে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ ও স্বাধীন বাংলাদেশে কারো প্রেসক্রিপশনে চলবে না এবং ঠাকুরগাঁও এয়ারপোর্ট উন্মুক্ত করে দিতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামীতে ঠাকুরগাঁয়ে দাঁড়িপাল্লা বিজয় হলে এয়ারপোর্টটি চালু হবে।
তিনি এ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল অবস্থার কথা তুলে ধরে বলেন, তার ভাই-বোনেরা শিক্ষার অধিকার পাচ্ছে না। তিনি বলেন, তাদের প্রার্থীরা শিশু থেকে শুরু করে সবার শিক্ষার অধিকার নিশ্চিত করবে। সেই সঙ্গে কৃষকসহ অন্যান্য পেশাজীবীদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে। হাসপাতালগুলোর ভঙ্গুর অবস্থা এবং সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়ার সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোকে আধুনিকায়ন, সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া এবং সব প্রকার কাজ তাদের প্রার্থীরা করবে। প্রবাসীদের সম্মান ও তাদের অধিকার আদায়ের কাজও করা হবে বলে তিনি জানান।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি দেলাওয়ার হোসেন বলেন, তারা দুর্নীতি ও চাঁদাবাজদের কোনো নেতৃত্ব চান না। তিনি বলেন, তারা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্নীতিমুক্ত ও চাঁদাবাজ মুক্ত প্রতিনিধি বাছাই করেছেন এবং আগামী দিনেও টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমুক্ত প্রতিনিধি বাছাই করা হবে ইনশাআল্লাহ।
তারুণ্য উৎসব ও নির্বাচনী সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা বেলাল উদ্দিন প্রধান, সেক্রেটারি মো. আলমগীর হোসেন এবং ঠাকুরগাঁও-২ আসনের প্রার্থী মাওলানা আব্দুল হাকিম প্রমুখ।
