গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর দাবি করেছেন যে, আওয়ামী লীগের আমলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের দলকে আসন এবং টাকা অফার করেছিলেন। তবে তিনি উল্লেখ করেন যে, গণঅধিকার পরিষদ ফ্যাসিবাদের সঙ্গে আপোষ করতে অস্বীকার করেছে। নূর স্পষ্ট করে বলেন, তারা মাত্র দুই থেকে চারটি আসনের জন্য কোনো দলের সঙ্গে জোট গঠন করবেন না। যদি দেশের প্রয়োজনে জোট গঠন করা হয়, তাহলে তা ন্যায্যতার বিচারে সম্মানজনক আসন সমঝোতার ভিত্তিতেই হবে।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নবীনগর পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নুরুল হক নূর এসব কথা বলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে দলীয় প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দিতে স্থানীয় গণঅধিকার পরিষদ এই জনসভার আয়োজন করে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসনে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলামকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন নুরুল হক নূর।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে চলেছে। নির্বাচন কমিশন তার কার্যক্রম সম্পন্ন করছে এবং ১১ তারিখ তফসিল ঘোষণা করার কথা রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামের লড়াকু ও আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ থাকায় যদি কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয় নির্বাচন পেছানোর, সেটি হয়তো নির্বাচন কমিশন এবং সরকার বিবেচনা করবে। অন্যথায় নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে হোক বা এপ্রিলে হোক, গণঅধিকার পরিষদ এককভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেবে। আর দেশের প্রয়োজনে কোনো জোট গঠন করলে, যেসব জায়গায় জনসমর্থন আছে, সেই সব আসনকে নিশ্চিত করেই তাদের জোট হবে।
তিনি আরও বলেন, তারা দেখতে পাচ্ছেন যে কিছু রাজনৈতিক দলের নেতারা পুরনো ফ্যাসিস্টদের মতোই হুমকি-ধামকি ও আধিপত্য বিস্তারের অপরাজনীতি দেশব্যাপী কায়েম করতে চাইছেন। তাদেরকে তিনি মনে করিয়ে দিতে চান যে, ১৬ বছরের অপশাসন মুহূর্তের মধ্যেই চুরমার হয়ে গেছে। জনগণের প্রতিবাদে নেতারা সীমান্ত দিয়ে, হেলিকপ্টার দিয়ে, নদী-নালা ও খাল-বিল দিয়ে যে যেভাবে পেরেছে পালিয়ে গেছে। কেউ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তাদের পরিণতিও তাই হবে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীজন হিসেবে তিনি সকল রাজনৈতিক দলকে সংযত এবং সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
নবীনগর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে এই জনসভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রঅধিকার পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক সানাউল্লাহ হক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি আশরাফুল হাসান তপু, নবীনগর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. কাইয়ূম প্রমুখ।
